গবেষণা হলো সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া । অন্যকথায় গবেষণা হলো
পুনঃঅনুসন্ধান (Re-search) । বলা
হয়ে থাকে যে, সম্পূর্ণ অজানাকে জানা নয়, বরঞ্চ যা সম্পর্কে অল্প বা অস্পষ্ট ধারণা
রয়েছে তাকে গভীরভাবে জানা ও স্পষ্ট করার মাধ্যমে সন্তুষ্টি অর্জন করাই গবেষণা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন- “জানার মাঝে অজানারে করেছি সন্ধান”
Paul
D. Leedy Says that, Research is a critic and exhaustive investigation or
experimentation having as its aim the revision of accepted conclusions in the
light of newly discovered facts. অর্থাৎ গবেষণা
হলো একটি তির্যক ও সামগ্রীক অনুসন্ধান বা পরীক্ষণ যার উদ্দেশ্য হচ্ছে নব উদ্ভাবিত
তথ্যের আলোকে প্রচলিত সিদ্ধান্তসমূহের সংশোধন করা।
আবার Richard M. Grinnell. Jr. গবেষণার একটি
সামগ্রিক সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন Research
is Structured inquiry that utilizes acceptable scientific methodology to solve
problems and creates new knowledge that is generally applicable. অর্থাৎ গবেষণা হচ্ছে সাধারণভাবে প্রয়োগযোগ্য নতুন জ্ঞান
সৃষ্টি অথবা কোনো সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পরিচালিত কাঠামোবদ্ধ অনুসন্ধান যেখানে
স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
গবেষণা কাজে গবেষক যে সকল উপাদান নিয়ে কাজ করেন তা নিম্নরুপঃ
১. অনুসন্ধিৎসু ও কৌতুহলী মনোবৃত্তি’
২. সুনির্দিষ্ট বিচরণক্ষেত্র,
৩. সুবিন্যস্ত অনুমান (অনুকল্প)
৪. পর্যবেক্ষণযোগ্য তথ্যের সহজলভ্যতা’
৫. বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ কৌশল, এবং
৬. ফলাফল উপস্থাপনের যৌক্তিক কৌশল।
গবেষণার প্রকারভেদ (Classification of Research)
গবেষণা সাধারণত তিন প্রকার যথাঃ
১. মৌলিক গবেষণা (Basic
Research)
২. ফলিত গবেষণা (Applied
Research)
৩. কার্যক্রম গবেষণা (Action Research)
১. মৌলিক গবেষণা (Basic research)
মৌলিক গবেষণাকে অনেক সময় Pure
Research, Fundamental Research ইত্যাদি নামেও
উল্লেখ করা হয়।এর মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বের বিভিন্ন মৌলিক নীতি ও সত্য আবিষ্কার করা
। এ নীতি অনুসারে মৌলিক গবেষণা সুদৃঢ়ভাবে কেবল তত্বের পরীক্ষা ও উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকে
মাত্র। মৌলিক গবেষণার সংজ্ঞায় Balley says
that, Pure Research involves developing and testing theories and hypothesis that
are intellectually interesting to the investigator and might thus have some
social application in the present time.
২. ফলিত গবেষণা (Applied Research)
ফলিত গবেষণাকে মাঠ গবেষণাও বলা হয়ে থাকে। এ গবেষণার মূল লক্ষ্যই হলো
প্রাপ্ত তথ্যকে মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করা এবং প্রয়োগ করা । মৌলিক গবেষণার মতো এখানে
নিয়ন্ত্রণ যথার্থতার প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে বরঞ্চ প্রায়োগিক দিকেই বেশী জোর দেওয়া
হয়। বস্তুতঃ বাস্তব সমস্যা সমাধান, উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয়
সমস্যা, চাহিদা, সম্পদ, প্রক্রিয়া ও লাভ-ক্ষতি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাবলী সংগ্রহ
করা এবং কার্যকারণ সম্পর্ক যাচাই করা হয়ে থাকে ফলিত গবেষণার মাধ্যমে । এর সংজ্ঞায় Kenneth D. bailey says that Applied research is
research with findings that can be applied to solve social problems of
immediate concern.
৩. কার্যক্রম গবেষণা (Action
Research)
ফলিত গবেষণার মাধ্যমে গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচীর প্রয়োগ এবং কার্যকারিতা ও
গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্যে তাৎক্ষণিকভাবে দ্রুততার সংগে যে সমস্ত গবেষণা করা হয় তাকেই
মূলতঃ কার্যক্রম গবেষণা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এর সংজ্ঞায় Lehmann and Mehrens says that Action research is a
type of applied of decision oriented research, but with the stipulation that
the researcher is the same person as the practitioner who will make and live
with the decision.
(তথ্যসূত্রঃ সমাজ গবেষণা পদ্ধতি-এ এস এম আতীকুজ্জামান, সৈয়দ শওকতুজ্জামান)
(তথ্যসূত্রঃ সমাজ গবেষণা পদ্ধতি-এ এস এম আতীকুজ্জামান, সৈয়দ শওকতুজ্জামান)